ভদন্ত উ: নন্দমালা মহাথের ১৯৬৬ সালের ১৫ আগষ্ট লামা উপজেলার ইয়াংছা এলাকার ত্রিশডেবা পাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মৃত ঞোহ্লাপ্রæ, মাতার নাম মৃত দ লা খা খুমী। তিনি একজন সমাজসেবক এবং আত্ম নিবেদিত ও পরোপকারী ব্যক্তি। এলাকায় জনহিতকর বহু কাজের জন্য তিনি সর্বমহলে শ্রদ্ধাভাজন। তিনি ইয়াংছা এলাকায় শিক্ষার আলো জ¦ালাতে একটি অনাথ আশ্রম গড়ে তোলেন। বর্তমানে তিনি ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ কারিগরী বোর্ডের আওতাধীনে ‘‘জীনামেজু টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট’’ নামে এসএসসি (ভোকেশনাল) প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। যাহা অত্র এলাকার শিক্ষার মান আরও উঁচুতে নিয়ে তিনি অত্র উপজেলার সর্বমহলের প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি বাংলায় অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন হন। ১৯৯৩ সালের ৩রা মার্চ তিনি ভিক্ষু উপসম্পদা প্রাপ্ত হন। তখন থেকে লামা উপজেলার ইয়াংছা এলাকার ত্রিশডেবা বৌদ্ধ বিহারে বিহারাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৪ সাল হতে বাংলাদেশ মারমা বুড্ডিস্ট এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য হয়ে লামা উপজেলার আহŸায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ত্রিশডেবা বৌদ্ধ বিহারটিতে নিজ তহবিলে নতুন পাকা বৌদ্ধ বিহারের রূপ দেন। এর পাশাপাশি মারমা ভাষা কবিতা ও গান লেখা-লেখি করে; ‘‘ত্রিশডেবা মহিলা কল্যাণ সমিতি’’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠন করেন।
১৯৯৭ সালের ২৭ মার্চ তারিখে এলাকার উন্নয়নে বনফুল বাজার এর শুভ উদ্ভোধনের পর বাজার উন্নয়ন কমিটির আহŸয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালে ফেব্রæয়ারী মাসের ৫ তারিখে ৩নং ফাঁসিয়াখালী এলাকার শিক্ষার আলো দেওয়ার জন্য ত্রিশডেবা জীনামেজু অনাথ আশ্রম স্থাপন করেন। ২০০০ সালে ফেব্রæয়ারী মাসের ২৭ তারিখে এলাকার স্বাস্থ্য সেবার সুবিধার্থে সরকারিভাবে ইয়াংছা বাজারে একটি ক্লিনিক স্থাপনে অনন্য ভুমিকা পালন করেন। ২০০২ সালে ত্রিশডেবা জীনামেজু অনাথ আশ্রমে সরকারিভাবে রেজিস্টার প্রাপ্ত হয়। ত্রিশডেবা এলাকার ২০ কি:মি: ভিতরে কোন জুনিয়র স্কুল না থাকায় উচ্চ শিক্ষার সুবিধার্থে ২০১১ সালে ইয়াংছা উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের্^ লামা-আলীকদম সড়ক হতে চকরিয়া সড়কের পূর্বটিলার উপরে ত্রিশডেবা জীনামেজু অনাথ আশ্রম ছাত্রাবাস স্থাপন করেন। বর্তমানে এ আশ্রমে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১১৫ জন। জীনামেজু আশ্রমের ৩ শিক্ষার্থীর বিদেশে লেখাপড়া করেন।
সর্বশেষ ২০২১ ইং সনে এলাকার কারিগরী শিক্ষার প্রসারে লক্ষ্যে ‘‘জীনামেজু টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট’’ প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।
এ আশ্রমের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে, সরকারী দপ্তরে অন্যান্য পদে কর্মজীবি, এসএসসি পরীক্ষার্থী, এইচ,এস,সি পরীক্ষার্থী, বি.এসহ অনার্স পরীক্ষার্থী রয়েছে।
ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের জন্য ২০০০ সালে তিনি ভারতের বুদ্ধগয়া, ২০০৬ সালে মিয়ানমারের চেইতে ¤্রাউ, ২০০৯ সালে মালেশিয়া সফর করেন। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এর ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সিভিল সার্ভিস ও সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা পদক গ্রহণ করেন।
২০১৯ সালে পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের ভিক্ষু সম্মেলন উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতিনীতি ধর্মদেশনা শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়া এবং অনাথ শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যত কল্যাণে নিবেদিত জীনামেজু অনাথ আশ্রমে কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য সম্মাননা সনদ লাভ করেন। ২০১১ সালে ইয়াংছা জীনামেজু অনাথ আশ্রমে অনুষ্ঠিত আন্তজার্তিক পর্যায়ের বুদ্ধ সম্মেলনে চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, বার্মা, ভারত ও বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সম্মেলনে আহŸায়ক হিসেবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করে সুনাম অর্জন করেন।
আমি ‘‘জীনামেজু টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট’’ এর সাফল্য কামনা করি।
ভদন্ত উ: নন্দমালা মহাথের
প্রতিষ্ঠাতা
জীনামেজু টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট
ইয়াংছা, কুমারী, লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।